যাঁরা একসময় জিয়াউর রহমানের প্রশংসায় মুখর ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ভোল পাল্টে এখন এখন বঙ্গবন্ধুর বন্দনা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
আজ সোমবার রাজধানীর সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী পুস্তক প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১২ বছর আগে অফিস-আদালত সব জায়গায় গেলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলতেন, জিয়াউর রহমান ও বিএনপির জন্য তাঁরা কত কী করেছেন! তাঁদের অনেকেই এখন ভোল পাল্টেছেন। এখন এমন মানুষও দেখি, যারা আমাদের অনেককে হত্যা করেছে, ছাত্রলীগের ছেলেদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল, তারাও এখন বঙ্গবন্ধুর নামে কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যাঁদের নিয়ে পথ চললেন, তাঁর মৃত্যুর ৮৩ দিন পর খুনি মোশতাকের ক্ষমতার সাথি হয়েছিলেন তাঁদের অনেকেই। মোশতাক সরকারের সময় ৮৩ দিনে যাঁরা সংসদে ছিলেন, তাঁদের একজনও পদত্যাগ করেননি।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন কে এম খালিদ। তিনি বলেন, ‘সুস্থ মস্তিষ্কে সজ্ঞানে জিয়াউর রহমানের পরিকল্পনায় জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান যখন মার্শাল ল দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন, তখন ৭ মার্চের ভাষণ বাজত না। আজকে তার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু সেই প্রাণের ছোঁয়াটি আসলেই কমে গেছে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক এবং একাত্তর টিভির সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু।
গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এই পুস্তক প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আজ থেকে শুরু হয়ে চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। এ আয়োজনে শিশুদের অংশগ্রহণে দলীয় ও একক নাচ, গান, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশিত হবে। থাকবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থপাঠের আয়োজনও। ১০১টি বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান আবৃত্তিকার রূপা চক্রবর্তী।